আজ সোমবার, ১৩ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অনড় অবস্থানে কয়সার বিপাকে খোকা

অনড় অবস্থানে

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। নারায়ণগঞ্জ ৩ আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত। তিনি দলীয় হুশিয়ারী উপেক্ষা করে এখনো নির্বাচন করতে অনড় অবস্থানে রয়েছে।

গত সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলায় পরিদর্শনে এসে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হুশিয়ারী দিয়ে গেছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা সরে না দাঁড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কায়সার হাসনাত মাঠে নিজের অবস্থান প্রতিনিয়ত শক্ত করে চলেছেন। তার শক্তির সামনে বর্তমান সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা একেবারে নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছেন।

সেই অবস্থানকে শক্ত করতে সম্প্রতি তিনি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানকে তার এলাকা মোগরাপাড়ায় নিয়ে সমাবেশ করেছেন। যে সমাবেশে বেশিরভাগ লোকবল ছিল নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে নেয়া। অপরদিকে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দুই প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বীতায় ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নান বেশ ফুরফুরে মেজাজে মাঠে অবস্থান করছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

জানা গেছে, ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন একদিনের মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সরে না দাঁড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে একদিন পেরিয়ে গেলেও সরে দাঁড়াননি সাবেক সংসদ সদস্য কায়সার হাসনাত। ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা একদিনের মধ্যে সরে না দাঁড়ালে বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করার এখন আর কোন সুযোগ নেই। এখন তারা সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে পারবেন। নির্বাচনের অবাধ, সুষ্ঠ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমূখর পরিবেশে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে তারা যে দলেরই হোক, তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচন কমিশন তদন্ত মোতাবেক বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে যে কোন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবেন। এতে আওয়ামী লীগের কোন দ্বিমত থাকবে না। ড. কামাল হোসেন ও কাদের সিদ্দিকী বঙ্গবন্ধুর সাথে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। সেই বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাই আজ তাদের প্রধান শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছেন। ভাবতে অবাক লাগে তারা এতোটাই নিচে নেমে গেছেন। তারা সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে ধানের শীষে ভোট চাইছেন। আবার নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বলেও দাবী করছেন। যা স্ববিরোধীতা ও হাস্যকর। বিএনপি জামায়াতের নতুন করে বন্ধুত্ব সৃষ্টিকে ছদ্দবেশী গণতন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।

এ সময় তার সাথে বর্তমান সরকারের রেলমন্ত্রী মজিবুল হক উপস্থিত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত জানিয়েছেন তাকে নিয়ে কে কি মন্তব্য করলো তা শোনার কিংবা ভাবার সময় নেই। তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় প্রচার প্রচারণার কাজে ব্যস্ত। তার বিশ্বাস ভোটের মাঠেই ব্যালটের মাধ্যমে সকল কথার জবাব দিবেন। এবিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন মন্তব্য বা পাল্টা মন্তব্য করে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চান না তিনি।

এদিকে গত ১৬ ডিসেম্বর সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় র‌্যালী অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কায়সারের উদ্দেশে বলেন, দল মহাজোটকে এ আসন ছাড় দিয়েছে। আমি আশা করি কায়সার ১৮ তারিখের পর এক মঞ্চে লাঙ্গলের পক্ষে ভোট চাইবেন। দলের স্বার্থ পরিপন্থী কাজ করবেন না। যারা দলের স্বার্থ পরিপন্থি কাজ করবেন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। তবে এর আগে বহুদিন থেকে মাঠে অবস্থান করা সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাত আওয়ামী লীগ ও মহাজোট থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত এই আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী চুড়ান্ত হলে নৌকার প্রতীক থেকে বঞ্চিত হন বিদ্রোহী প্রার্থী কায়সার হাসনাত। তবে নির্বাচনী মাঠ থেকে পিছু না হটে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সিংহ প্রতীক নিয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত মাঠে অবস্থান করাতে সোনারগাঁ আসনে সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা ধীরে ধীরে নেতিয়ে পড়েছেন। তিনি নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারছেন না বলে জানিয়েছে নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মী ও সমর্থক হারিয়ে তিনি একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ও সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নায় দলীয় নেতাকর্মীদের সমর্থন ও ভোটারদের সাথে নিয়ে ফুরফুরে মেজাজে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ